এই তিনজন হলেন ফরিদপুরের কানাইপুর এলাকার বিকাশ অধিকারী, ফরিদপুর সদরের বাসিন্দা পলাশ কুন্ডু ও একই এলাকার সীমা অধিকারী। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে যশোর শহরের চারখাম্বার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
যশোর কোতোয়ালি থানা সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে শহরের চারখাম্বার মোড়ে কমলা রঙের সালোয়ার কামিজ পরিহিত এক নারীকে নিয়ে টানাটানি করছিলেন দুই ব্যক্তি। তারা দুজনই ওই নারীকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করছিলেন। একপর্যায়ে শুরু হয় হাতাহাতি।
দুজনের টানাটানি ও হাতাহাতি দেখে ভিড় করেন উৎসুক জনতা। কেউ কেউ ভিডিও করতেও শুরু করেন। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তিনজনকেই নিয়ে যায় থানায়।
এরপর সেখানেই শুরু হয় নাটকের পরবর্তী অংশ। থানা চত্বরেই তারা কয়েক দফা নিজেদের মধ্যে শুরু করেন টানাটানি-হাতাহাতি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ তিনজনকেই ১৫১ ধারায় (নিরাপদ হেফাজত) মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। পরে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফরিদপুরের কানাইপুরের বাসিন্দা বিকাশ অধিকারী। তার সঙ্গে সীমা অধিকারীর প্রায় ৩৬ বছরের সংসার। এই সংসারে তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। কিন্তু সেই সংসার ছেড়ে সীমা অধিকারী ফরিদপুর সদরের বাসিন্দা পলাশ কুন্ডুর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। শুধু তাই নয়, বিকাশ অধিকারীর ঘর ছেড়ে পলাশের হাত ধরে তিনি ভারতে চলে যান এবং সেখানে তারা বিয়েও করেন।
এরপর সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে তারা যশোরে এসে একটি হোটেলে ওঠেন। বিষয়টি জানতে পেরে বিকাশের সন্দেহ হয় এবং তিনি সেই হোটেলে যান। এরপরই ত্রিমুখী এই ঝামেলা গড়ায় থানা পর্যন্ত।
সীমার দ্বিতীয় স্বামী পলাশ কুন্ডু জানান, সীমার সঙ্গে তার তিন বছরের সম্পর্ক। তারা দুজনেই স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছেন। এখন একসঙ্গে থাকতে চান।
কিন্তু তাদের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন বিকাশ।
এ বিষয়ে সীমা অধিকারী বলেন, বিকাশের সংসারে তিনি নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতেন। সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তিনি বাধ্য হয়ে বিকাশকে ছেড়ে পলাশকে বিয়ে করেছেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি আর বিকাশের সঙ্গে সংসার করবেন না।
তবে প্রথম স্বামী বিকাশ অধিকারীর দাবি, সীমার পরকীয়ায় কারণে তাদের সাজানো সংসার ভেঙে যাচ্ছে। সীমা শুধু বাড়ি ছাড়েননি, বরং পালিয়ে যাওয়ার সময় নগদ টাকা ও গয়নাও নিয়ে গেছেন। তিনি সীমাকে যে কোনো মূল্যে বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে চান।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী বাবুল জানান, ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনজনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। থানায় দীর্ঘক্ষণ তাদের সঙ্গে কথা বলেও কোনো সিদ্ধান্তে আসা যায়নি। পরে ১৫১ ধারায় তাদের আটক দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
একইসঙ্গে তাদের স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে।
যশোর আদালতের কোট পরিদর্শক রোকসানা খাতুন বলেন, ‘সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের বিচারক শান্তনু কুমার মন্ডল তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
মন্তব্য করুন
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়:-
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী শাফায়েত হোসেন অভিযোগ করে বলেছেন, প্রশাসন স্বাক্ষরবিহীন ব্যালটে ভোট নিচ্ছে। এমনকি ছবি চেক না করেই ভোট দিতে দিচ্ছে প্রশাসন।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) বেলা ১১টায় ভোট দিয়ে এসে আইডি ভবনের সামনে সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, আমি প্রশাসনকে আমার পরিচয় দেওয়ার পর আইডি চেক করে। কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীদের আইডিও চেক করছে না। আমরা বারবার প্রশাসনকে বলার পরও কোনো ধরনের স্টেপ নিচ্ছে না প্রশাসন।
তিনি বলেন, আমরা চেয়েছিলাম চাকসু নির্বাচন কমিশন ইতিহাসের একটা অংশ হিসেবে থাকবে। আসলে তারা কতটুকু সফল হবে আমরা বলতে পারছি না।
মন্তব্য করুন
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়:-
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সময় ভোটারদের আঙুলে দেওয়া অমোচনীয় কালি মুছে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় ও শিবিরের ভিপি প্রার্থী ইব্রাহিম হোসেন রনি।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় আইটি ভবন কেন্দ্রে ভোট প্রদান শেষে তারা এই অভিযোগ করেন। ছাত্রদল প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় বলেন, ভোটারদের আঙুলে দেওয়া কালি মুছে যাচ্ছে। ফলে তারা পুনরায় ভোট দিতে যাওয়ার একটা আশঙ্কা আছে।
আমি নিজেও এখন ভোট দিয়ে এসেছি, কিন্তু আমার আঙুলের কালি মুছে গেছে। বিষয়টি আমরা লিখিতভাবে নির্বাচন কমিশনকে জানাবো।
অন্যদিকে শিবির প্রার্থী ইব্রাহিম হোসেন রনি অভিযোগ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছিল, এমন কালি ব্যবহার করা হবে যা কয়েক দিনেও মুছে ফেলা যাবে না। কিন্তু দুঃখজনকভাবে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীদের আঙুলের কালি কিছুক্ষণের মধ্যেই উঠে যাচ্ছে। নির্বাচনের শুরুতেই এটি শঙ্কার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, জাতীয় নির্বাচনে জার্মান থেকে কালি আনা হয়। ব্যবহারের পর বাকিটা ধ্বংস করে দেওয়া হয়। আমাদের নির্বাচনে সেই কালি সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। তবে দেশের সবচেয়ে ভালো যে কালি সেটি দেওয়া হয়েছে। চাকসু নির্বাচনে এই কালি ব্যবহার জরুরি না, নিয়ম রক্ষার জন্য দেওয়া হয়েছে। ভোটারের আইডি কার্ড, ভোটার নম্বর ও ভোটার তালিকায় থাকা ছবিসংবলিত তথ্যের মাধ্যমে ভোটারের পরিচয় ভেরিফাই করা হচ্ছে।
এর আগে
মন্তব্য করুন
বেতন–ভাতা বাড়ানোর দাবিতে রাজপথে নেমেছেন দেশের সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষকরা।
ফলে সারাদেশে প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস বন্ধ, কার্যত অচল হয়ে পড়েছে শিক্ষা কার্যক্রম।
অন্যদিকে, প্রাথমিক শিক্ষকরা ১৭ অক্টোবর থেকে আমরণ অনশনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন।
📚 বেসরকারি শিক্ষকদের লাগাতার কর্মবিরতি
বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বাড়ানোর দাবিতে সাড়ে তিন লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও দেড় লাখ কর্মচারী
দেশব্যাপী অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছেন।
ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তাদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চলছে।
শিক্ষকদের দাবি—সরকারি চাকরিজীবীদের মতো মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ভাতা দিতে হবে।
কিন্তু শিক্ষক দিবসে অর্থ মন্ত্রণালয় মাত্র ৫০০ টাকা বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন জারি করলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তারা।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন, “সরকার বারবার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে। দাবি পূরণ না হলে সচিবালয় অভিমুখে মিছিল হবে।”
🎓 সরকারি কলেজেও কর্মবিরতির ডাক
শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারাও আন্দোলনে নেমেছেন।
‘মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর’ ভেঙে দুটি পৃথক অধিদপ্তর করার উদ্যোগের প্রতিবাদে
দেশের সব সরকারি কলেজে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চলছে। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল বলেন, “শিক্ষকদের দাবি উপেক্ষা করে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তা হিতে বিপরীত হবে।”
🧒 ১৭ অক্টোবর থেকে প্রাথমিক শিক্ষকদের আমরণ অনশন
৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা
১১তম গ্রেডের দাবিতে আন্দোলনে আছেন।
দাবি পূরণ না হওয়ায় তারা আগামী ১৭ অক্টোবর থেকে ঢাকায় আমরণ অনশন শুরু করবেন।‘সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’-এর সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন বলেন,
“বহুবার প্রতিশ্রুতি পেয়েছি, বাস্তবায়ন হয়নি। এবার দাবি আদায় না করে ফিরব না।”
📉 শিক্ষার মান নিয়ে শঙ্কা
শিক্ষাবিদরা বলছেন, চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “যে জাতির শিক্ষকরা আর্থিকভাবে ভঙ্গুর, সেই জাতি মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারে না।”
রাশেদা কে চৌধূরী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা, বলেন, “শিক্ষকদের ন্যায্য বেতন না থাকলে মানসম্মত শিক্ষা আশা করা অর্থহীন। তারা টিকে থাকার জন্যই প্রাইভেট পড়ানোয় ঝুঁকছেন।”
🏛️ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীরবতা, অনিশ্চিত শিক্ষাব্যবস্থা
এ আন্দোলন নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় এখনও কোনো সুস্পষ্ট অবস্থান জানায়নি।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন,
যদি দ্রুত সমাধান না আসে, পুরো শিক্ষাব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
🔸 কী চাইছেন শিক্ষকরা:
মূল বেতনের ২০% হারে বাড়িভাড়া ভাতা
চিকিৎসা ও উৎসব ভাতা বৃদ্ধি
প্রাথমিক শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড
শিক্ষা ক্যাডারের কাঠামোগত সংস্কারে ন্যায়সংগত সমাধান
🔸 কী ঘটছে:
সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি
সরকারি কলেজে ক্লাস বন্ধ, ১৭ অক্টোবর থেকে প্রাথমিক শিক্ষকদের আমরণ অনশন
শিক্ষার্থীদের সিলেবাস অসম্পূর্ণ, পরীক্ষা অনিশ্চিত
👉 পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে প্রতিদিন। শিক্ষকরা বলছেন, এবার আর প্রতিশ্রুতিতে নয়—চাই বাস্তবায়ন।
মন্তব্য করুন
এ ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে, প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে হঠাৎ সালেকার বসতঘরের পাশে থাকা একটি প্লাস্টিকের বস্তা পুকুরে ভেসে ওঠে। পরে একজন বস্তাটি কৌতূহলবশত পুকুর থেকে তুলে দেখেন, ভেতরে টাকা ভর্তি আরও দুটি বস্তা। বস্তা দুটিতে এক, দুই, পাঁচ, দশ, বিশ, পঞ্চাশ ও শত টাকার অনেক নোট ও পয়সা।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রতিবেশী আব্দুল কাদের জানান, ৫-৭ জন প্রায় চার ঘণ্টা গুনে মোট এক লাখ ২৬ হাজার ২৫৩ টাকা পাওয়া গেছে। বেশ কিছু টাকার নোট ছিঁড়ে অচল হয়ে গেছে। স্থানীয়রা জানান, ভিক্ষুক সালেকা পাগলি ওই এলাকার মৃত আব্দুস ছালামের স্ত্রী।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে রায়পুর মিলগেট এলাকার পরিত্যক্ত একটি কক্ষে বসবাস করেন। তার নাম সালেকা বেগম হলেও সবাই তাকে ‘সালেকা পাগলি’ নামেই চেনেন। তিনি প্রায় ৪০ বছর ধরে ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এতে প্রতিদিন যা উপার্জন হতো তা তিনি সঞ্চয় হিসেবে তার পরিত্যক্ত ঘরের দুটি বস্তায় সংরক্ষণ করেছেন।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। দুই বস্তা টাকা উদ্ধারের খবর শুনে সেখানে অনেকেই ভিড় জমিয়েছিলেন। পরে স্থানীয়রা টাকাগুলো হিসাব করে তার মেয়ে ও মেয়ের জামাইয়ের হাতে তুলে দিয়েছেন।’
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনোয়ার হোসেন বলেন, টাকা উদ্ধারের বিষয়টি জেনেছি। সংগ্রামী ওই নারী দীর্ঘদিন কষ্ট করে এই টাকা সঞ্চয় করেছিলেন। তার এক মেয়েও রয়েছেন। ওই পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
মন্তব্য করুন
এভাবেই নিজের অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্তের কথা জানান মেহেরপুরের বেতবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ইমারুল ইসলাম। তার মতো অনেকেই অসুস্থ পশুর মাংসের সংস্পর্শে এসে সংক্রামক এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
মেহেরপুরে অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। চলতি বছরে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৬৪ জন। অসুস্থ পশু জবাই ও তার মাংস থেকে মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রামক এই রোগ। ছড়িয়ে পড়ার কারণ হিসেবে প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগের ভূমিকাকে দুষছেন স্থানীয়রা।
জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, মেহেরপুর জেলায় চলতি বছরে ৪৬৪ জন অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত রোগীর ৯৭ শতাংশই গাংনী উপজেলার বাসিন্দা। উপজেলার কাজীপুর, বামুন্দি, ছাতিয়ান ও মোটমুড়া ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে হানা দিয়েছে ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ অ্যানথ্রাক্স। বেশিরভাগ সময় স্থানীয়ভাবেই চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। অবস্থা বেগতিক হলে সরকারি হাসপাতালের শরণাপন্ন হয় এ অঞ্চলের মানুষ।
রোগাক্রান্ত পশুর মাংস খাওয়া ও এর সংস্পর্শে এ রোগে আক্রান্ত হলেও অনেকেই জানেন না এর ভয়াবহতা।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়ার মাংস স্পর্শ করাতে মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ছে এই রোগ। তবে এই রোগের জীবাণু মাটিতেও থাকে বলে জানিয়েছেন তারা।
বাওট গ্রামের চাদনি খাতুন বলেন, ‘বাজার থেকে গরুর মাংস কিনে আনেন আমার স্বামী। সেই মাংস রান্নার জন্য প্রস্তুত করি। সেসময় আমার দুই হাতের আঙুলে জ্বালাপোড়া শুরু হয়। পরে সেখানে ফোসকা পড়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়। পরে চিকিৎসা নিয়ে জানতে পারি, আমার অ্যানথ্রাক্স হয়েছে।’
উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন কাজিপুর গ্রামের সাইদুরের স্ত্রী পারভিনা। পরীক্ষায় তার শরীরেও অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়। পরে ১৫ দিন চিকিৎসা নিতে হয় তাকে।
কাজীপুর গ্রামের আফাজউদ্দিন বাজারে মাংসের ব্যবসা করেন। রোগাক্রান্ত গরুর মাংস নাড়াচাড়া করার কারণে তার শরীরে প্রথমে ক্ষত সৃষ্টি হয়। পরে পরীক্ষা করে অ্যানথ্রাক্স রোগ ধরা পড়ে। একই উপজেলার হাড়াভাঙ্গা গ্রামের মালেক মোল্লা জানান, তিনি বাজার থেকে গরুর মাংস কিনে আনেন। সেই মাংস নাড়াচাড়া করার কারণে তার শরীরে অ্যানথ্রাক্স ছড়িয়ে পড়ে।
অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন গাড়াবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, ‘বাড়ির একটি অসুস্থ ছাগল জবাই করার পর ডান হাতের একটি আঙুলে ফোড়ার মতো দেখা দেয়। পরে হাসপাতালে গেলে চিকিৎসকরা জানান, অ্যানথ্রাক্স হয়েছে। টানা আট মাস চিকিৎসা নেওয়ার পর ঘা শুকিয়ে যায়।
গাংনী উপজেলার তহবাজারের মাংস বিক্রেতা জবান মণ্ডল বলেন, ‘গরু বা ছাগলের মাংস কাটা ও বিক্রি করার সময় খালি হাত ব্যবহার করা হয়। এ কারণে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।’
তবে ভ্যাকসিন প্রাপ্যতা নিয়ে প্রাণিসম্পদ বিভাগের প্রতি অভিযোগ এলাকাবাসীর। স্বাস্থ্য বিভাগের সচেতনতা কার্যক্রম, অসুস্থ পশু জবাই ও বিক্রি রোধে কোনো পদক্ষেপ নেই বলে জানান স্থানীয়রা।
গ্রাম্য চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিলে শরীরে ব্যাকটেরিয়ার স্পোর থেকে যায়, যা বিপদজনক। তাই এ ধরনের কোনো লক্ষণ দেখা দিলেই হাসপাতালে আসার আহ্বান জানান গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. ফারুক হোসেন।
তিনি বলেন, ‘যাদের শরীরে ঘা কিংবা খোস-পাঁচড়ার মতো কোনো ক্ষত থাকে, তারা অ্যানথ্রাক্স রোগের জীবাণুতে খুব দ্রুত আক্রান্ত হন। তবে রান্না করা মাংসে এ জীবাণুর কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়।’
গবাদিপশুর মাংস খুবই সতর্কতার সঙ্গে নাড়াচাড়া করতে হবে।
অবশ্যই হাতে গ্লাভস পরে পশুর মাংস স্পর্শ করা উচিত। তারপরও কারও শরীরে এমন লক্ষণ দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।
গাংনী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোত্তালেব আলী বলেন, গবাদিপশুকে শতভাগ ভ্যাকসিনেশনের আওতায় নিয়ে এলে এ রোগের প্রাদুর্ভাব কমে যাবে।
তিনি বলেন, মাত্র ৩০ হাজার অ্যানথ্রাক্স টিকা এসেছে। এরমধ্যে ২০ হাজার গবাদিপশুকে টিকা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা পর্যায়ে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে লোকবলের অভাব ও পর্যাপ্ত টিকা সরবরাহ না থাকায় অ্যানথ্রাক্স রোগ নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছে না। মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. একেএম আবু সাঈদ বলেন, ‘এ রোগ চামড়ায় দেখা দিলেও ফুসফুস ও খাদ্যনালী আক্রান্ত হলে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।
সামাজিক সচেতনতা তৈরির মাধ্যমে এটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সচেতনতা কার্যক্রম চালু রয়েছে।’
মন্তব্য করুন
রোববার (৫ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
মৃত ৯ জনের মধ্যে ৭ জনই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের।
বাকি দুজনের একজন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও অন্যজন চট্টগ্রাম বিভাগের। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৯৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০৪ জন, ঢাকা বিভাগে ২০১ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১৯৮ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১২১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪১ জন, রংপুর বিভাগে ২৩ জন, সিলেট বিভাগে ৯ জন ও রাজশাহী বিভাগে ৮২ জন রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৯৮ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ছাড়পত্র পেয়েছেন ৪৭ হাজার ২৫৬ জন। ২০২৪ সালে দেশে মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ৫৭৫ জনের।
এর আগের বছর ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে মারা যান সর্বোচ্চ ১ হাজার ৭০৫ জন এবং আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।
মন্তব্য করুন
স্টাফ রিপোর্টার:-
কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে আলুর সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করেছে সরকার। হিমাগারের গেটে প্রতিকেজি আলুর মূল্য সর্বনিম্ন ২২ টাকা ধরা হয়েছে। একইসঙ্গে ৫০ হাজার টন আলু সরকারি উদ্যোগে কেনারও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে আলুর দাম উৎপাদন খরচের তুলনায় অস্বাভাবিকভাবে কম থাকায় আলুচাষিরা ক্ষতির মুখে পড়ছিলেন। কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনায় চার সদস্যবিশিষ্ট একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিবকে সভাপতি করে ওই কমিটিতে বাণিজ্য, খাদ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবরা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
কমিটির সুপারিশ পর্যালোচনা করে সরকার তিনটি সিদ্ধান্ত নেয়—
১. হিমাগার গেটে আলুর কেজি প্রতি সর্বনিম্ন মূল্য ২২ টাকা নির্ধারণ।
২. সরকারি উদ্যোগে ৫০ হাজার টন আলু ক্রয় করে হিমাগারে সংরক্ষণ এবং আগামী অক্টোবর-নভেম্বর মাসে বাজারজাত করা।
৩. আগামী মৌসুমে আলুচাষিদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া।
কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে কৃষকের উৎপাদিত আলুর ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা এবং বাজারে মূল্যস্থিতি বজায় রাখাই সরকারের মূল লক্ষ্য।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ঢাকায় থাকেন গায়িকা পুতুল। বাবা-মায়ের বাড়ি ফেনী শহরে। গত কয়েক দিনে ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এতে পুতুলদের ফেনী শহরের উকিলপাড়ার বাড়ির দোতলা পর্যন্ত পানি উঠেছে। এই বাড়িতে পুতুলের ভাই তাঁর পরিবার নিয়ে থাকতেন। পাশে বড় বোনও থাকতেন। গত দুদিনে বন্যার পানি বেড়ে যাওয়াতে পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হয়েছে। শহরের সেই বাড়িতে পানিবন্দী সবাই। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে ভাই-বোনের খোঁজও পাচ্ছে না পুতুল!
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন