রিম আবু উদ্দাহ; ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞের মধ্যে বিরল সাহস ও ঈমানি দৃঢ়তার এক অনন্য নজির স্থাপন করা এক ফিলিস্তিনি কিশোরী। ইসরায়েলি বাহিনীর ব্যাপক বোমাবর্ষণে গুরুতর আহত হয়েও হাসপাতালের বিছানায় থাকা অবস্থাতেই পুরো কোরআন হিফজ (মুখস্ত) করেছে সে।
তীব্র শারীরিক যন্ত্রণা সত্ত্বেও অবিচল অধ্যবসায় পবিত্র কোরআনের পথে জয়ী করেছে তাকে। শনিবার (৪ অক্টোবর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে অসাধারণ এ গল্প।
হাসপাতালে শয্যাশায়ী রিম আল জাজিরাকে জানান, পবিত্র কোরআন মুখস্থ করার পথটি একইসঙ্গে সুন্দর ও কঠিন ছিল তার জন্য। রিম জানান, গত বছর ২৪ আগস্ট ছিল তার মায়ের মৃত্যুদিবস।
সেই দিনেই হিফজ সম্পন্ন করতে চেয়েছিল সে; কিন্তু তার দুই দিন আগেই, অর্থাৎ ২২ আগস্টের বিমান হামলায় গুরুতর আহত হয় সে। ইসরায়েলি বাহিনীর বোমার আঘাতে তার শরীরের একাধিক স্থানে শেলবিদ্ধ হয় এবং পেট জখম হয়।
তিনি আরও বলেন, আমি সেই এলাকায় আশ্রয় নিয়েছিলাম, যাকে দখলদাররা নিরাপদ বলে ঘোষণা করেছিল। কিন্তু আমাদের পাশের তাঁবুতেই হামলা চালানো হয়। আল্লাহর অনুগ্রহে, প্রায় এক মাস চিকিৎসার সময় হাসপাতালেই আমি কুরআন মুখস্থ সম্পন্ন করি। আলহামদুলিল্লাহ,
আমি কুরআন মুখস্থ করেছি। রিমের বোন সাফা আবু উদ্দাহ জানান, রিম হাসপাতালে শয্যায় শুয়ে থেকেই কুরআন হিফজ শেষ করে। সে কোরআন তেলাওয়াত করতো, আর চিকিৎসকেরা তার অবিশ্বাস্য ধৈর্য ও মানসিক শক্তি দেখে রীতিমতো বিস্মিত হতেন। রিম তার বোন সাফাকে নিজের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা ও জীবনের অবলম্বন বলে উল্লেখ করেছেন।
রিমের ভাষায়, এই ভয়াবহ যুদ্ধের পুরো সময় জুড়ে কোরআনই ছিল আমার ধৈর্য ও স্থিতিশীলতার প্রধান উৎস। কোরআন হিফজে এই অসাধারণ ধৈর্য ও অধ্যবসায়ের স্বীকৃতিস্বরূপ গাজা শহরের হাবিব মুহাম্মদ সেন্টার-এর পক্ষ থেকে রিম আবু উদ্দাহকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
রিমের এই অর্জন গাজার ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও ঈমান, দৃঢ়তা আর শিক্ষার প্রতি ভালোবাসার এক জ্বলন্ত প্রতীক হিসেবে ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
মন্তব্য করুন
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাসটিতে মোট ৫৭ জন যাত্রী ছিলেন। বাসটি জয়সালমের থেকে যাত্রা শুরু করেছিল বিকেল ৩টার দিকে।
যাত্রাপথে জয়সালমের-যোধপুর হাইওয়েতে বাসের পেছনের অংশ থেকে হঠাৎ ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। চালক সঙ্গে সঙ্গে বাসটি থামিয়ে দেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই আগুন পুরো বাসে ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দারা ও পথচারীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধারকাজে হাত লাগান। খবর দেওয়া হয় দমকল ও পুলিশকে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বাসে শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে, দুর্ঘটনায় পড়া বাসটি মাত্র পাঁচ দিন আগে কেনা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা মঙ্গলবার রাতেই জয়সালমেরে পৌঁছান এবং ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাসটি পরিদর্শন করেন।
বাসে থাকা ১৫ জন গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন। অনেকের শরীরের ৭০ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গেছে। তাদের প্রাথমিকভাবে জয়সালমেরের জওহর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য যোধপুর পাঠানো হয়।
জয়সালমের জেলা প্রশাসন জানায়, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হয়। জেলা কালেক্টর প্রতাপ সিং আহতদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি জারি করা হয় হেল্পলাইন নম্বর।
আহতদের দ্রুত স্থানান্তরের জন্য জাতীয় সড়ক ১২৫-তে তৈরি করা হয় ‘গ্রিন করিডোর’। পুলিশের সহায়তায় আটটি অ্যাম্বুলেন্সে করে রোগীদের পাঠানো হয়। জেলা প্রশাসক নিশ্চিত করেছেন যে বাসটি পুরোপুরি পুড়ে গেছে এবং অনেক মরদেহ চেনার অযোগ্য হয়ে গেছে।
যোধপুর থেকে ডিএনএ ও ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে মরদেহ শনাক্তে সহায়তার জন্য। জেলা কালেক্টর বলেন, আহমেদাবাদের বিমান দুর্ঘটনার মতোই ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মৃতদের পরিচয় নিশ্চিত করা হবে এবং তারপরই মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এই দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক্স-এ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পোস্ট করে বলা হয়েছে, রাজস্থানের জয়সালমেরে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় আমি মর্মাহত। এই দুঃসময়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রতি আমার সমবেদনা। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
এই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে চলতি সপ্তাহে কাবুলে পাকিস্তানের কথিত বিমান হামলার পর। এটি নিয়ে দুই দেশের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছে, পাকিস্তান তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে হামলা চালিয়েছে।
পাকিস্তানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আফগান বাহিনীর হামলার জবাবে তারা ভারী অস্ত্রে পাল্টা গুলি চালিয়েছেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনী আর্টিলারি, ট্যাংক, হালকা ও ভারী অস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে নিশ্চিত করেছে সামরিক সূত্র।
পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেছেন, দেশের জনগণের জীবন রক্ষায় আমরা যা যা প্রয়োজন, তা করছি এবং করবো। আফগানিস্তানকে অনুরোধ করছি, যেন তাদের ভূখণ্ড পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে ব্যবহৃত না হয়।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইমতিয়াজ গুল বলেন, গত কয়েক মাস ধরে টিটিপি (তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান) ঘাঁটিতে পাকিস্তানের ধারাবাহিক অভিযান এবং আফগান সরকারের নিষ্ক্রিয় অবস্থানের ফলে এই সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠেছিল। পাকিস্তান অনেকদিন ধরেই ধৈর্য ধরে ছিল, কিন্তু এবার সরাসরি পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আফগানিস্তানের জবাব
সীমান্তে সংঘর্ষের জেরে পাকিস্তানকে কঠোর জবাব দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে আফগান তালেবান। আফগানিস্তানের ভূখণ্ডে পাকিস্তানের বিমান হামলার প্রতিশোধ নিতে আফগান বাহিনী ‘তীব্র সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে’ বলেও জানিয়েছে তারা।
শনিবার মধ্যরাত পর্যন্ত অভিযান চলেছে বলে জানিয়েছেন তালেবান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এনায়াত খোয়ারাজম। তিনি বলেন, ‘অভিযান সফলভাবে শেষ হয়েছে, তবে যদি পাকিস্তান আবারও আমাদের ভূখণ্ডে হামলা চালায়, আমরা কঠোর জবাব দেবো’
কতদিন চলবে সংঘাত?
ওয়াশিংটনভিত্তিক দক্ষিণ এশিয়া বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, ‘সীমান্তে ক্রমবর্ধমান হামলা, পাকিস্তানের অস্বাভাবিকভাবে তীব্র পাল্টা অভিযান এবং তালেবানের প্রতিশোধমূলক হামলা—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এক ভয়াবহ মোড় নিয়েছে। আফগানিস্তান যেহেতু দৌরান্দ রেখাকে স্বীকৃতি দেয় না, তার সঙ্গে ভুয়া তথ্যের ছড়াছড়ি পুরো সংকটকে আরও জটিল করে তুলেছে।’
তার মতে, তালেবান সরাসরি পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে মোকাবিলায় সক্ষম নয়। জনমতের চাপে তারা হয়তো কিছুদিন প্রতিশোধ নিতে পারে, তবে তা স্থায়ী হবে না।
২০২১ সালের পর থেকে আফগান ভূখণ্ডে প্রশিক্ষণ নেওয়া তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) পাকিস্তানে শত শত সেনা হত্যা করেছে বলে অভিযোগ ইসলামাবাদের। কাবুল সবসময় এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
কুগেলম্যান বলেন, পাকিস্তানের সাম্প্রতিক হামলাগুলো টিটিপিকে আরও উসকে দিতে পারে। এর প্রতিশোধ নিতে গিয়ে তারা নতুন হামলা চালালে পাকিস্তান আবারও পাল্টা অভিযান শুরু করবে—এই সংঘাতচক্রই এখন সবচেয়ে বড় ঝুঁকি।
মন্তব্য করুন
তবে সেনা প্রত্যাহার করা হলেও গাজার ৫০ শতাংশের বেশি এলাকা ইসরায়েলি সেনাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। গাজার বাসিন্দারা স্থানীয় সংবাদদাতাদের জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনী গাজা সিটির উত্তর-পশ্চিম প্রান্ত থেকে পূর্ব দিকে সরে গিয়েছে।
এ বিষয়ে ইসরায়েলি গণমাধ্যমও নিশ্চিত করেছে যে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গাজা উপত্যকার কিছু অংশ থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, সেনারা এমন স্থানে ফিরে যাবে যেখানে ইসরায়েলের গাজা উপত্যকার প্রায় ৫৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ থাকবে।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক পোস্টে বলেছেন, “একটি নির্ধারিত সীমারেখা পর্যন্ত সেনা প্রত্যাহার করা হবে। কোন কোন এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হবে তা নিয়ে গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউস একটি মানচিত্র প্রকাশ করে। এ মানচিত্রে হলুদ রেখা দিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের প্রাথমিক প্রত্যাহারের সীমারেখা দেখানো হয়েছিল।
তখনই জানানো হয়েছিল, এটি সেনা প্রত্যাহারের তিন ধাপের প্রথম ধাপ। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার আহত হয়েছেন বলে তথ্য প্রকাশ করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ইউনিসেফের তথ্য মতে, এ যুদ্ধে ২০ হাজারের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ৪২ হাজারের বেশি শিশু; যাদের মধ্যে অন্তত ২১ হাজার শিশু স্থায়ীভাবে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
মন্তব্য করুন
কমিটি জানিয়েছে, মাচাদোকে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে ভেনেজুয়েলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তার অবিচল ও সাহসী ভূমিকা এবং স্বৈরশাসন থেকে ন্যায়ভিত্তিক ও শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রূপান্তর ঘটানোর জন্য তার দীর্ঘ লড়াইয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ।
ঘোষণায় বলা হয়েছে, গণতন্ত্রের জন্য তার অবিচল সংগ্রাম ও অহিংস প্রতিরোধের মাধ্যমে মারিয়া কোরিনা মাচাদো শুধু ভেনেজুয়েলায় নয়, বরং সারা বিশ্বের গণতন্ত্রকামী জনগণের জন্য প্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছেন।
গত বছর (২০২৪) নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছিল জাপানের অ্যান্টি-নিউক্লিয়ার সংগঠন নিহন হিদানকিয়ো, যা হিরোশিমা ও নাগাসাকির পরমাণু বোমা হামলার বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের এক তৃণমূল আন্দোলন।
এর আগে, ২০২৩ সালে শান্তিতে নোবেল পেয়েছিলেন ইরানের নার্গিস মোহাম্মাদি । ইরানি নারীদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই ও সবার জন্য মানবাধিকার ও স্বাধীনতার প্রচারের জন্য তাকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
২০২২ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান বেলারুশের মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী আলেস বিলিয়াতস্কি, রুশ মানবাধিকার সংস্থা মেমোরিয়াল ও ইউক্রেনীয় মানবাধিকার সংস্থা সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিজ।
২০২১ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন ফিলিপাইনের সাংবাদিক মারিয়া রেসা এবং রাশিয়ার সাংবাদিক দিমিত্রি মুরাতভ। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য দুঃসাহসিক লড়াইয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি তিনবার শান্তিতে নোবেল পেয়েছে রেড ক্রস (১৯১৭, ১৯৪৪ ও ১৯৬৩ সালে)। এছাড়া জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর পেয়েছে দু’বার (১৯৫৪ ও ১৯৮১ সালে)।
মন্তব্য করুন
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির প্রাথমিক চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যের জন্য এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উন্মোচন করেছে। পথটি সংকীর্ণ হলেও এটি ১৯৯৩ ও ১৯৯৫ সালের অসলো চুক্তির পর থেকে টেকসই শান্তির সবচেয়ে বড় সম্ভাবনা।
এই নতুন দৃষ্টিভঙ্গি অসলো-পরবর্তী অচল ধারণা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। এটি মানচিত্র আর দুই রাষ্ট্রের তাত্ত্বিক অন্তহীন আলোচনার পরিবর্তে বাস্তবভিত্তিক একটি পথ দেখায়। গাজা যখন পুনর্গঠিত হবে, সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর প্রভাবমুক্ত হবে, তখন ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিরা বুঝবে—সহাবস্থান ধ্বংসের চেয়ে বেশি লাভজনক।
এই সাফল্য কোনো হোয়াইট হাউজের আনুষ্ঠানিক চুক্তিপত্র নয়, বরং বছরের পর বছর ধরে গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ, পশ্চিম তীরে সহিংস ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের নিয়ন্ত্রণ, রকেট হামলার হুমকি হ্রাস এবং মানুষদের মধ্যে শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতি ক্রমবর্ধমান বিশ্বাসের প্রতিফলন।
এই শান্তিচুক্তি ট্রাম্পের চাপ প্রয়োগমূলক ও বাস্তববাদী কূটনীতির এক বড় সাফল্য। মিশরের শার্ম আল-শেখে উভয় পক্ষ যখন আলোচনায় ব্যস্ত ছিল তখন যুক্তরাষ্ট্র, মিশর, কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতাকারীরা চাপ প্রয়োগ করছিলেন।
যদিও সব বিবরণ প্রকাশ পায়নি, তবে ধারণা করা হচ্ছে, হামাস অবশিষ্ট ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে, বিনিময়ে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি বন্দিদের ছেড়ে দেবে, মানবিক সহায়তা প্রবাহিত হবে এবং ইসরায়েলি সেনারা গাজার প্রধান শহরগুলো থেকে আংশিকভাবে সরে যাবে।
ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনা অনুযায়ী, পরবর্তী ধাপে হামাস-বিহীন একটি সরকার গাজা পুনর্গঠন করবে, আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী নিরাপত্তা দেবে, আর ট্রাম্প নিজে তদারকি বোর্ডের চেয়ারম্যান থাকবেন যতদিন না ফিলিস্তিনিরা পূর্ণ দায়িত্ব নিতে সক্ষম হয়। চূড়ান্ত লক্ষ্য—ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের মধ্যে চিরস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা।
তবে চ্যালেঞ্জও বিশাল। হামাসের নিরস্ত্রীকরণসহ নানা বিষয়ে উভয় পক্ষের মতভেদ রয়ে গেছে। গাজা প্রায় ৭৮ শতাংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ায় পুনর্গঠন কঠিন হবে। সবচেয়ে বড় বাধা হলো—ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শান্তির প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে যাওয়া।
অসলো চুক্তির তিন দশক পর এবং ৭ অক্টোবরের ঘটনার পর অধিকাংশ ইসরায়েলি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডকে দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও ঘৃণার এক ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে দেখে। ২০১২ সালে যেখানে ৬১ শতাংশ ইসরায়েলি দুই রাষ্ট্র সমাধানকে সমর্থন করেছিল, এখন তা নেমে এসেছে মাত্র এক-চতুর্থাংশে।
অন্যদিকে, ফিলিস্তিনিদের বড় অংশ ইসরায়েলকে দখলদার ও দমনমূলক রাষ্ট্র হিসেবে দেখে। মে মাসের এক জরিপে দেখা গেছে, ৫০ শতাংশ ফিলিস্তিনি ৭ অক্টোবরের হামলাকে সমর্থন করেছে এবং ৮৭ শতাংশ হামাসের নৃশংসতা অস্বীকার করেছে।
তবু আশার আলো রয়েছে। যুদ্ধের অবসান দুই পক্ষেই নেতৃত্ব পরিবর্তনের সুযোগ এনে দিতে পারে।
ইসরায়েলে এক বছরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে, যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনঞ্জামিন নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক অধ্যায়ের অবসান ঘটাতে পারে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও পরিস্থিতি অনুকূল। বিশ্ব এখন শান্তির দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। ট্রাম্প, যিনি ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে দ্বিধা করেন না, এই মুহূর্তে একটি প্রভাবশালী মধ্যস্থতাকারী।
ইরান ও তার প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোর দুর্বল অবস্থানও অঞ্চলে স্থিতিশীলতার সুযোগ বাড়িয়েছে। উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলো গাজার পুনর্গঠন ও শান্তি প্রক্রিয়ায় অর্থনৈতিক সহায়তা দিতে রাজি—এটি বিশাল ইতিবাচক পদক্ষেপ।
তবে উভয় পক্ষের উগ্র মনোভাব নিয়ন্ত্রণ করতে বাইরের শক্তিদের সক্রিয় থাকতে হবে। ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণ রোধ, ফিলিস্তিনি প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা এবং সহিংসতা দমন করা জরুরি। অন্যদিকে, আরব রাষ্ট্রগুলোকে ফিলিস্তিনিদের অহিংসার পথে আনতে ও প্রশাসনিক সংস্কার ত্বরান্বিত করতে হবে।
দীর্ঘমেয়াদে লক্ষ্য হতে পারে একটি নতুন আঞ্চলিক নিরাপত্তা কাঠামো—যেখানে ইসরায়েল ও আরব রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা গভীরতর হবে, ২০২০ সালের আব্রাহাম চুক্তির ভিত্তিতে। এটি সিরিয়া ও লেবাননের সঙ্গেও নতুন সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে, যারা ইরানের প্রভাব থেকে ক্রমে মুক্ত হচ্ছে।
সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দু হলো গাজা। বিশ্ব দেখবে, ইসরায়েল কি সত্যিই আন্তর্জাতিক সহায়তায় গাজার নতুন প্রশাসন গঠনে রাজি হয়, এবং গাজার ফিলিস্তিনিরা কি আত্মনিয়ন্ত্রণ ও সশস্ত্রগোষ্ঠীমুক্ত শাসন দেখাতে পারে।
ট্রাম্প যেভাবে যুদ্ধবিরতি আনতে সক্ষম হয়েছেন—চাপ, তাগিদ ও চরম বাস্তববোধে ভর করে—সেই কৌশল দীর্ঘমেয়াদে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় যথেষ্ট নাও হতে পারে। তবুও, এক অবিরাম রক্তপাতের অঞ্চলে এটি এক বিরল মুহূর্ত, একটি ক্ষীণ হলেও বাস্তব সম্ভাবনা, নতুন সূচনার।
সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট
মন্তব্য করুন
ট্রাম্পের আফগান ঘাঁটি দখলচেষ্টার বিরুদ্ধে বিরল ঐক্য দেখা গেলো এশীয় দেশগুলোর মধ্যে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাগরাম ঘাঁটি ফের দখলে নেওয়ার উদ্যোগের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে আফগানিস্তানের আঞ্চলিক প্রতিবেশীরা। এমনকি, এই বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ মত দিয়েছে ভারত-পাকিস্তানের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীরাও।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) মস্কো ফরম্যাট অব কনসালটেশন্স অন আফগানিস্তান-এর সদস্যরা এক যৌথ বিবৃতিতে ‘আফগানিস্তানকে স্বাধীন, ঐক্যবদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের অটল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত’ করেছে। তারা আরও উল্লেখ করেছে, কোনো দেশ যদি আফগানিস্তান বা তার প্রতিবেশী দেশে সামরিক অবকাঠামো স্থাপন করতে চায়, তা গ্রহণযোগ্য হবে না।
কারণ এটি আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে অবদান রাখে না। মস্কো ফরম্যাট অব কনসালটেশন্স অন আফগানিস্তান-এর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ভারত, পাকিস্তান, চীন, রাশিয়া, ইরান এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ট্রাম্প বছর পাঁচেক আগে আফগানিস্তানের বাগরাম ঘাঁটি তালেবানের কাছে হস্তান্তর করেছিলেন, যা কাবুল থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পথ সুগম করেছিল। তবে সম্প্রতি তিনি ঘাঁটিটি আবারও যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এমনকি, বাগরাম ফেরত না পেলে ‘খারাপ কিছু ঘটবে’ বলে হুমকিও দিয়েছেন।
তবে তালেবান ট্রাম্পের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। বাগরাম ঘাঁটি চীনের সীমান্ত থেকে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। উল্লেখ্য যে, মঙ্গলবারের বিবৃতিতে ভারতও সমর্থন জানিয়েছে, যা ওয়াশিংটন-নয়াদিল্লি সম্পর্কের অবনতির মধ্যে আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্ভাব্য সমঝোতার ইঙ্গিত বহন করে।
আগামী ৯ অক্টোবর থেকে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুততাকি প্রথমবারের মতো নয়াদিল্লি সফর করতে যাচ্ছেন।
জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন আমাদের আফগানিস্তান কোনো বিদেশি সামরিক উপস্থিতি মেনে নেবে না। তিনি বলেন, আফগানিস্তান একটি স্বাধীন দেশ, এবং ইতিহাস জুড়ে বিদেশিদের সামরিক উপস্থিতি কখনো গ্রহণ করা হয়নি। আমাদের নীতি ও সিদ্ধান্ত আফগানিস্তানকে স্বাধীন রাখার জন্য অটল থাকবে।
মন্তব্য করুন
নিহতদের মধ্যে কয়েকজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন আমিন সওদাগর, আরজু, রকি, বাবলু, শাহাবউদ্দিন, জুয়েল, রনি ও আলাউদ্দিন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওমানের দুকুম সিদরা এলাকার সাগর থেকে মাছ ধরে ফেরার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রবাসীদের বহনকারী গাড়িটি। এসময় মাছবাহী একটি কনটেইনার ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে তাদের গাড়িটি দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই আটজন নিহত হন।
ওমানে বাংলাদেশ দূতাবাসের সচিব (শ্রম) আসাদুল হক গণমাধ্যমকে জানান, দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই ৮ বাংলাদেশি শ্রমিক নিহত হন। এ ঘটনায় চালক গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত চালককে উদ্ধার করে নিকটবর্তী একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছেন।
বর্তমানে মরদেহগুলো মর্গে রাখা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ বাংলাদেশে পরিবারের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।
সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মংচিংনু মারমা জানান, ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় সন্দ্বীপ উপজেলার সাতজন প্রবাসী নিহত হওয়ার বিষয়টি শুনেছি। বিস্তারিত জানতে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
বিশ্বকাপের ঠিক আগে প্রকাশ্যে এলো এই টুর্নামেন্টের অফিসিয়াল ম্যাচ বল— ‘ট্রাইওন্ডা’।
নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিন পার্কে আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠানে উন্মোচিত হয় বলটি।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফুটবল বিশ্বের পাঁচ কিংবদন্তি তারকা— জার্মানির ইয়ুরগেন ক্লিন্সম্যান, ব্রাজিলের কাফু, ইতালির দেল পিয়েরো, স্পেনের জাভি এবং ফ্রান্সের জিনেদিন জিদান।
অনুষ্ঠানে জিদানের হাতে ছিল নতুন বল ‘ট্রাইওন্ডা’, আর অন্যদের হাতে ছিল তারা যে বছর বিশ্বকাপ জিতেছিলেন সেই বছরের অফিসিয়াল বল।
বলটি তৈরি করেছে ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাস, যারা টানা ১৫তম বার বিশ্বকাপের বল তৈরি করল। ১৯৭০ সাল থেকে অ্যাডিডাসই বিশ্বকাপের অফিসিয়াল বল সরবরাহ করে আসছে।
ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফ্যান্টিনো জানিয়েছেন, ‘২০২৬ সালের বিশ্বকাপ বলের নকশায় তিন আয়োজক দেশ— আমেরিকা, কানাডা এবং মেক্সিকো — কে একত্রে তুলে ধরা হয়েছে।’
‘ট্রাইওন্ডা’ নামের ‘ট্রাই’ শব্দটি এসেছে ‘তিন’ অর্থে এবং ‘ওন্ডা’ মানে ‘ঢেউ’। বলটিতে ব্যবহার করা হয়েছে তিনটি রং — লাল রং আমেরিকার প্রতীক, নীল রং কানাডার প্রতীক, সবুজ রং মেক্সিকোর প্রতীক।
বলটির নকশায় তিন দেশের প্রতীকও ফুটে উঠেছে— আমেরিকার তারা, কানাডার ম্যাপল লিফ এবং মেক্সিকোর ঈগল। ‘ট্রাইওন্ডা’তে রয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও সেন্সর সিস্টেম, যা ভিএআর ব্যবস্থাকে আরও নিখুঁত করবে।
বলের ভেতরে থাকা সেন্সর ভিএআর-কে আরও নির্ভুল তথ্য দেবে, ফলে অফসাইড, গোল বা হ্যান্ডবলের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে দ্রুত ও সহজভাবে।
ফিফার মতে, নতুন বলের গঠন ও লোগো খোদাই এমনভাবে করা হয়েছে যাতে গোলরক্ষকদের বল ধরতে কোনো সমস্যা না হয়। ২০২৬ বিশ্বকাপ শুরু হবে ১১ জুন, আর ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ১৯ জুলাই।
তিন দেশের যৌথ আয়োজনে, নতুন প্রযুক্তি আর রঙিন বল ‘ট্রাইওন্ডা’— সব মিলিয়ে ফুটবল দুনিয়া অপেক্ষায় রয়েছে এক নতুন ইতিহাসের জন্মের।
মন্তব্য করুন
এ বছরের শিক্ষক দিবসের প্রতিপাদ্য, ‘শিক্ষকতা পেশা: মিলিত প্রচেষ্টার দীপ্তি’। এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারাবিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আজ বাংলাদেশেও এই দিবস উদযাপন হবে।
দিবসটি পালনের অংশ হিসেবে আজ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সকালে গুণী শিক্ষক সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে ১২ জন শিক্ষককে দেওয়া হবে সংবর্ধনা। এজন্য প্রাথমিকভাবে ৩৬ জন শিক্ষককে নির্বাচিত করা হয়েছিল।
দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মাধ্যমিক, মাদরাসা, কারিগরি ও প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে তাদের বাছাই করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ বছরের বিশ্ব শিক্ষক দিবসের নীতিমালা অনুযায়ী, দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব উপজেলা, জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ উদযাপন করা হবে।
এমতাবস্থায়, দিবসটি যথাযথভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অনুরোধ জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ১৯৯৩ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ২৬তম সাধারণ সভায় ৫ অক্টোবর দিনটিকে বিশ্ব শিক্ষক দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এরপর ১৯৯৪ সালে প্রথমবারের মতো দিবসটি পালন করা হয়। ১৯৯৫ সাল থেকে বিভিন্ন দেশে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ পালন শুরু হয়। ইউনেস্কোর অনুমোদনে প্রতি বছর পৃথক প্রতিপাদ্যে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
মন্তব্য করুন
ভাগ্যবান বিজয়ীর নাম হারুন সরদার নূর নবি সরদার। ৪৪ বছর বয়সী এই বাংলাদেশি ট্যাক্সিচালক বর্তমানে শারজাহ শহরে বসবাস করছেন। তিনি গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিজয়ী টিকিট কিনেছিলেন।
ড্র চলাকালে জনপ্রিয় দুই সঞ্চালক রিচার্ড ও বুচরা স্বর্ণালি ফোনে হারুনকে কল করে ২০ মিলিয়ন দিরহাম (প্রায় ৬৬ কোটি টাকা) জেতার সুসংবাদ জানান। এসময় জীবনের সবচেয়ে বড় পুরস্কার জেতার খবর শুনে তিনি বিস্মিত হয়ে যান এবং কেবল ‘ওকে, ওকে’ বলেন।
হারুন জানান, তিনি এই টিকিট ১০ জনের সঙ্গে মিলে কিনেছিলেন। তাই পুরস্কার ভাগ করে নেওয়া হবে সবার মধ্যে। তিনি ২০০৯ সাল থেকে আমিরাতে কাজ করছেন এবং গত ১৫ বছর ধরে আবুধাবিকে নিজের দ্বিতীয় ঘর বানিয়ে নিয়েছেন। পরিবার বাংলাদেশেই থাকে। নিয়মিতভাবে তিনি বিগ টিকিট কিনে আসছিলেন এবং কখনো আশাহত হননি।
বিগ টিকিট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অক্টোবর মাসে আরও বড় অফার থাকছে। আগামী ৩ নভেম্বরের ড্র-তে থাকছে ২ কোটি ৫০ লাখ দিরহামের গ্র্যান্ড প্রাইজ। এছাড়া প্রতি সপ্তাহে পাঁচজন বিজয়ী পাবেন ২৪ ক্যারেটের ২৫০ গ্রাম সোনার বার।
সূত্র: খালিজ টাইমস
মন্তব্য করুন
গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, শনিবার ভোর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজাজুড়ে একের পর এক বিমান হামলা ও আর্টিলারি শেলিং চালিয়েছে।
গাজার পশ্চিমে একটি ড্রোন হামলায় এক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন অনেকে। এ ছাড়া আল-মাওয়াসি এলাকায় একটি তাঁবুতে হামলায় দুই শিশু নিহত ও আটজন আহত হয়েছেন। উল্লেখ্য, আল-মাওয়াসিকে ইসরায়েল তথাকথিত মানবিক নিরাপদ অঞ্চল ঘোষণা করেছিল। কিন্তু সেখানেও টানা হামলা চালানো হচ্ছে।
অন্যদিকে নুসেইরাত ক্যাম্প ও তুফাহ্ এলাকায়ও বিমান হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে এক কিশোরীও রয়েছে। এদিন গাজা নগরীর উত্তরে ফেরার চেষ্টা করা কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে ইসরায়েলি সেনারা গুলি করে হত্যা করেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
নেতজারিম করিডর ঘেঁষে অবস্থান নিয়ে ইসরায়েলি বাহিনী উত্তরাঞ্চলে ফেরত যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালাচ্ছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, উত্তর গাজা এখনো যুদ্ধক্ষেত্র এবং সেখানে ফিলিস্তিনিদের ফেরার অনুমতি নেই।
এর আগে, হামাস আংশিকভাবে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করার পর ট্রাম্প ইসরায়েলকে গাজায় হামলা বন্ধ রাখতে বলেছিলেন।
ট্রাম্পের ঘোষিত প্রস্তাবে যুদ্ধবিরতি, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্দি মুক্তি, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং ধাপে ধাপে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের বিষয় উল্লেখ রয়েছে। তবে ওই উদ্যোগ কার্যকর হওয়ার আগেই ফের হামলার ঘটনা ঘটলো।
সূত্র: আল-জাজিরা
মন্তব্য করুন
মার্কিন কংগ্রেস থেকে জানানো হয়েছে, এই অর্থায়ন চলমান অর্থবছরের মধ্যে দেওয়া হবে। লেবাননের মতো ছোট একটি দেশের জন্য এটি একটি বড় পদক্ষেপ।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন,যুক্তরাষ্ট্রের এ সহায়তা লেবাননের বাহিনীকে সমর্থন করে। যাতে তারা দেশজুড়ে লেবাননের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ১৭০১ নম্বর প্রস্তাব পুরোপুরি কার্যকর করতে পারে।
লেবাননের এক কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, এই সহায়তা অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীকে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সামলাতে সক্ষম করবে, ফলে সেনাবাহিনীকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আরও কার্যকর হতে সাহায্য করবে।
মন্তব্য করুন
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) এ অভিযোগকে ‘মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রন্ধীর জয়সওয়াল বলেন, আমরা এই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দেশটির আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে বারবার দায় চাপাচ্ছে।
জয়সওয়াল আরও বলেন, তাদের উচিত হবে আত্মসমালোচনা করা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে স্থানীয় উগ্রপন্থিদের সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও ভূমি দখলের ঘটনাগুলো নিয়ে গুরুতর তদন্ত করা।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) অভিযোগ করে যে, কিছু গোষ্ঠী খাগড়াছড়ি জেলায় সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এই সহিংসতার সঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের সংশ্লিষ্টতার ইঙ্গিত দেন।
উপদেষ্টা বলেন, দুর্গাপূজার উৎসবমুখর পরিবেশ নষ্ট করার উদ্দেশ্যে খাগড়াছড়ির অস্থিরতা সৃষ্টি করা হয়েছে। একটা স্বার্থান্বেষী মহল অশান্তি তৈরি করতে চাইছে... তারা খাগড়াছড়ির ঘটনার পেছনে রয়েছে, মন্তব্য করেন তিনি। আরও জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ‘সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা’ চালাচ্ছে।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা সদরের সিঙ্গিনালা এলাকায় এক কিশোরীকে অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে সদর থানায় মামলা করেন। পরদিন ২৪ সেপ্টেম্বর পুলিশ সন্দেহভাজন শয়ন শীলকে (১৯) গ্রেফতার করে।
এই মামলা কেন্দ্র করে খাগড়াছড়িকে অশান্ত করার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। কিন্তু পরবর্তী সময়ে জানা যায় ওই কিশোরী ধর্ষণের শিকারই হয়নি।
মেডিকেল রিপোর্টে ধর্ষণের কোনো আলামতই পাওয়া যায়নি। কিন্তু মেডিকেল রিপোর্ট হাতে আসার আগেই দুর্বৃত্তরা শত শত ঘরবাড়ি ও দোকানে ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ড ঘটায়।
মন্তব্য করুন
যুক্তরাজ্যের সঙ্গে কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপের দেশ পর্তুগাল ও ফ্রান্সও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। ইউরোপের আরও তিনটি দেশ স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে গত বছরই এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য দেশের প্রায় ৭৫ শতাংশ এরই মধ্যে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এদিকে, যুক্তরাজ্যের এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছে ইসরায়েলি সরকার, জিম্মিদের পরিবার ও কিছু কনজারভেটিভ নেতা।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, এমন পদক্ষেপ ‘সন্ত্রাসকে পুরস্কৃত করার’ সমান।
তবে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীরা বলেন, দীর্ঘমেয়াদি শান্তির আশা টিকিয়ে রাখতে নৈতিক দায়িত্ব থেকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
সরকারি সূত্র জানিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহে গাজার পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। তারা বলছে, গাজায় অনাহার ও সহিংসতার চিত্র ‘সহ্য করা যাচ্ছে না।
ইসরায়েলের সর্বশেষ স্থল অভিযানকে এক জাতিসংঘ কর্মকর্তা ‘মহাপ্রলয়সদৃশ’।
দখলদার বাহিনীর অভিযানে লাখ লাখ মানুষ গাজা সিটি থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে জাতিসংঘের এক তদন্ত কমিশন উপসংহার টানে যে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েল গণহত্যা চালিয়েছে।
ইসরায়েল এই প্রতিবেদনকে ‘বিকৃত ও মিথ্যা’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। ব্রিটিশ মন্ত্রীরা আরও বলেন, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের ক্রমাগত সম্প্রসারণ আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ ও এটাই তাদের এই সিদ্ধান্তে বড় ভূমিকা রেখেছে।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস চলতি মাসের শুরুতে স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকে যুক্তরাজ্যের স্বীকৃতির প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানান। দুই নেতা একমত হন যে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন শাসন ব্যবস্থায় হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না।
স্টারমার আগেই জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনকে সময়সীমা হিসেবে ঠিক করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, যদি ইসরায়েল গাজার পরিস্থিতির অবসান, যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি এবং দীর্ঘমেয়াদি শান্তিচুক্তির পথে দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নেয়, তবে যুক্তরাজ্য এই পদক্ষেপ নেবে।
তিনি বলেন, আমি সবসময়ই বলেছি, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে তখনই, যখন তা শান্তি প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বড় অবদান রাখবে। এখন যখন সেই সমাধান হুমকির মুখে, তখনই পদক্ষেপ নেওয়ার সময়।
মন্তব্য করুন
হামলার জন্য আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে (আরএসএফ) দায়ী করা হয়েছে। তবে তারা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ওই হামলার দায় স্বীকার করেনি।
গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে সুদানে সেনাবাহিনী ও আরএসএফ-এর মধ্যে ভয়াবহ সংঘাত চলছে। গত কয়েক সপ্তাহে আরএসএফ বড় ধরনের অগ্রগতি দেখিয়েছে এবং তারা এল-ফাশের পুরোপুরি দখলে নেওয়ার জন্য লড়াই করছে।
এই শহরটি দারফুরে সেনাবাহিনীর শেষ ঘাঁটি এবং এখানে এখনো তিন লাখের বেশি বেসামরিক মানুষ অবরুদ্ধ হয়ে আছেন।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ভোরে ফজরের নামাজের সময় ড্রোন হামলা চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে বহু মানুষ প্রাণ হারায়। চিকিৎসা সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ৭৮ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে এবং প্রায় ২০ জন আহত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে লোকজনকে উদ্ধারে কাজ চলছে।
বিবিসি ভেরিফাই ফুটেজ নিশ্চিত করেছে যে, সেখানে প্রায় ৩০টি মরদেহ সাদা কাফনের কাপড় ও চাদরে মোড়ানো অবস্থায় মসজিদের পাশে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
চলতি সপ্তাহে আরএসএফ নতুন করে এল-ফাশেরে আক্রমণ চালিয়েছে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শহরের কাছেই অবস্থিত বাস্তুচ্যুত লোকজনের আশ্রয় নেওয়া আবু শৌক নামের একটি শিবিরেও ভয়াবহ হামলা চালানো হয়েছে।
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাবের (এইচআরএল) স্যাটেলাইটের ছবিতে দেখা গেছে, ওই আশ্রয়কেন্দ্রের একটি বড় অংশ এখন আরএসএফ-এর নিয়ন্ত্রণে। এছাড়া ছবিতে দেখা গেছে, আরএসএফ সেনারা জয়েন্ট ফোর্সের সদর দপ্তরে প্রবেশ করেছে।
এই সদর দপ্তরটি একসময় জাতিসংঘ কম্পাউন্ড ছিল এবং এটি সেনাবাহিনীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষাকেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হয়।
বিবিসি যাচাই করা ফুটেজে দেখা গেছে, আরএসএফ যোদ্ধারা এখন ওই কম্পাউন্ডের ভেতরে অবস্থান করছে, তবে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে কি না তা এখনো নিশ্চিত নয়। এই অগ্রগতি হলে এল-ফাশেরের বিমানবন্দর এবং সেনাবাহিনীর ডিভিশন সদর সরাসরি আরএসএফ-এর হামলার আওতায় চলে আসবে।
সুদানের বিশ্লেষক ও কর্মীরা আশঙ্কা করছেন, আরএসএফ শহরে থাকা বেসামরিকদের টার্গেট করতে পারে। শহরের অধিকাংশ বাসিন্দাই এমন জাতিগত গোষ্ঠীর সদস্য, যাদের আরএসএফ শত্রু হিসেবে দেখে।
শুক্রবার জাতিসংঘ এক প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলেছে, সংঘাত ক্রমশ জাতিগত রূপ নিচ্ছে। দুই পক্ষই পরস্পরের সমর্থক হিসেবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ওপর প্রতিশোধমূলক হামলা চালাচ্ছে।
জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা নথিভুক্ত করেছে যে, আরএসএফ দখলকৃত এলাকায় অ-আরব সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে জাতিগত নিধন চালাচ্ছে।
তবে আরএসএফ এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং বলেছে যে তারা কোনো ‘গোত্রীয় সংঘাতের’ সঙ্গে জড়িত নয়।
মন্তব্য করুন
বৈঠকে উপস্থিত একজন মন্ত্রীর বরাত দিয়ে কাঠমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, সোমবার বিক্ষোভকালে কাঠমান্ডুতে ১৭ জন এবং ইটাহরিতে দুজন নিহত হওয়ার পর নৈতিক দায় স্বীকার করে তিনি পদত্যাগ করেছেন।
এর আগে দিনের শুরুতে নেপালি কংগ্রেসের কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের বৈঠকে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক গগন থাপা এবং বিশ্ব প্রকাশ শর্মা নৈতিক কারণে লেখকের পদত্যাগের দাবি জানান।
রমেশ লেখককে গত ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মৃত ও আহতদের মধ্যে অনেকের পরিচয় এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।
এদিন বিক্ষোভকারীরা নির্দেশনা ভেঙে পার্লামেন্ট প্রাঙ্গণে প্রবেশ করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। এসময় পুলিশ জলকামান, টিয়ারগ্যাস ও গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এতে বহু বিক্ষোভকারী আহত হন।
নেপালের তরুণরা মূলত সরকারের দুর্নীতি ও ২৬টি অনিবন্ধিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম—যার মধ্যে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব ও স্ন্যাপচ্যাট রয়েছে—নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে।
সংঘর্ষের পর কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন শহরের বিভিন্ন এলাকায় কারফিউ জারি করেছে। এ বিক্ষোভ দেশের অন্যান্য বড় শহরেও ছড়িয়ে পড়েছে।
মন্তব্য করুন
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আল জাজিরার আরও পাঁচ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। সাংবাদিকদের একটি আবাসস্থল লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে দখলদার বাহিনী।
এতে সাংবাদিক আনাস আল-শরিফ এবং তার চার সহকর্মী নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যায় গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালের প্রধান ফটকের বাইরে অবস্থিত তাঁবুতে হামলায় সাতজন নিহত হন।
তাদের মধ্যে রয়েছেন আল জাজিরার সংবাদদাতা আনাস আল-শরিফ, মোহাম্মদ ক্রিকেহ এবং ক্যামেরা অপারেটর ইব্রাহিম জাহের, মোহাম্মদ নৌফাল এবং মোমেন আলিওয়া।
নিহত হওয়ার কিছুক্ষণ আগে ২৮ বছর বয়সী আল-শরীফ উত্তর গাজা থেকে যোগাযোগ করেছিলেন। তিনি সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে লিখেছেন ইসরায়েল গাজা শহরের পূর্ব এবং দক্ষিণ অংশে তীব্র বোমাবর্ষণ করছে। আল শরীফ আল জাজিরার একজন সুপরিচিত সাংবাদিক ছিলেন।
তার শেষ ভিডিওতে ইসরায়েলের তীব্র বোমাবর্ষণের বিকট শব্দ শোনা গেছে। সে সময় অন্ধকার আকাশ কমলা আলোর ঝলকানিতে আলোকিত হয়ে ওঠে।
যদি বেঁচে না থাকেন তবে তার মৃত্যুর পর যেন প্রকাশিত হয় এমন একটি বার্তায় আল শরীফ লিখেছেন, তিনি প্রচণ্ড যন্ত্রণার মধ্যে বেঁচে ছিলেন। বার বার আঘাত ও ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে তাকে।
তিনি ওই বার্তায় লিখে গেছেন, সবকিছুর পরেও আমি সত্যকে যেমন আছে তেমনভাবে প্রকাশ করতে কখনও দ্বিধা করিনি, বিকৃতি বা ভুল কোনো তথ্য উপস্থাপন করিনি।
এই আশায় যে আল্লাহ তাদের সাক্ষী থাকবেন যারা নীরব ছিলেন, যারা আমাদের হত্যা মেনে নিয়েছিলেন এবং যারা আমাদের নিঃশ্বাস রোধ করেছে।
আমাদের শিশু ও নারীদের ছিন্নভিন্ন দেহও তাদের হৃদয়কে নাড়া দেয়নি বা দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে আমাদের জনগণ যে গণহত্যার শিকার হচ্ছে তারা সেটা থামাতে পারেনি।
স্ত্রী বায়ানকে ছেড়ে যেতে হবে এবং ছেলে সালাহ ও মেয়ে শামের বড় হওয়া দেখে যেতে পারবেন না বলেও দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন আনাস আল-শরিফ।
এক বিবৃতিতে আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক এই হত্যাকাণ্ডকে ‘সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর আরেকটি স্পষ্ট এবং পূর্বপরিকল্পিত আক্রমণ’ বলে নিন্দা জানিয়েছে।
গাজার অন্যতম সাহসী সাংবাদিক আনাস আল শরীফ এবং তার সহকর্মীদের হত্যার নির্দেশ, গাজার আসন্ন দখল এবং দখলদারিত্বের বিষয়টি প্রকাশকারী কণ্ঠস্বরকে নীরব করার একটি মরিয়া প্রচেষ্টা বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
এই চলমান গণহত্যা বন্ধে এবং সাংবাদিকদের ইচ্ছাকৃতভাবে লক্ষ্যবস্তু করা বন্ধ করার জন্য সিদ্ধান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং সকল প্রাসঙ্গিক সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আল জাজিরা।
আল জাজিরা জোর দিয়ে বলছে যে অপরাধীদের জন্য দায়মুক্তি এবং জবাবদিহিতার অভাব ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করছে এবং সত্যের বিরুদ্ধে আরও নিপীড়নকে উৎসাহিত করছে।
আল জাজিরার সংবাদদাতা হানি মাহমুদ, হামলার সময় মাত্র এক ব্লক দূরে ছিলেন। তিনি বলেন, গত ২২ মাসের যুদ্ধে আল-শরীফের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করা তার জন্য সবচেয়ে কঠিন কাজ ছিল।
নেটওয়ার্কের ইংরেজি চ্যানেলে কর্মরত মাহমুদ বলেন, গাজায় ফিলিস্তিনিদের দুর্ভিক্ষ, দুর্ভিক্ষ এবং অপুষ্টির ওপর নিরলসভাবে প্রতিবেদন করার কারণে সাংবাদিকদের হত্যা করা হয়েছে, কারণ তারা এই অপরাধের সত্যতা সকলের কাছে তুলে ধরছেন।
২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েল গাজায় আক্রমণ চালানোর পর থেকে নিয়মিতভাবে গাজার ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের হামাসের সদস্য বলে অভিযুক্ত করে আসছে এবং তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় এখন পর্যন্ত ২০০ জনেরও বেশি সাংবাদিক এবং মিডিয়া কর্মীকে হত্যা করেছে, যার মধ্যে বেশ কয়েকজন আল জাজিরার সাংবাদিক এবং তাদের আত্মীয়স্বজনও রয়েছেন।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন